ওজন বাড়াতে চাই-১
|অনামিকা মৌ|
বয়স
এবং উচ্চতা অনুযায়ী ওজন না হওয়াটা অনেকের কাছেই বিব্রতকর একটি বিষয়। অনেকে
বেশি খেয়েও ওজন বাড়াতে পারেন না। আবার অনেকে কি ধরনের খাবার খাবেন তা নিয়ে
থাকেন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে। ওজন কম বেশি হওয়ার সাথে বংশগত এবং শারীরিক কিছু
ব্যাপার জড়িত। তা সত্ত্বেও খাদ্যাভ্যাসও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ওজন কম সমস্যায় যারা ভুগছেন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং কিছু নিয়ম মেনে চললে
শরীর অনুযায়ী স্বাভাবিক ওজন লাভ করা তাদের পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়।
প্রতিদিন শরীরকে দিতে হবে একটু বাড়তি ক্যালরি

প্রতিদিন আমরা যে খাবার খাই তা থেকে আমরা ক্যালরি পাই। এই ক্যালরি দৈনন্দিন কাজে খরচ হয়। বাকি যেটুকু অবশিষ্ট থাকে সেটা শরীরে সঞ্চিত হয়। এভাবেই আমাদের ওজন বাড়ে। তবে দৈনিক ক্যালরি গ্রহণ বৃদ্ধি করতে অবলম্বন করতে হবে একটু সতর্কতা। আপনি যদি বেশি বেশি আইসক্রিম, ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড খান তাহলে তা শুধু আপনার শক্তির অপচয় হবে এবং নানা রোগ বাসা বাধবে। এমন খাবার বেছে নিতে হবে যেগুলোর ক্যালরি বেশি কিন্তু পুষ্টিকর। যেমন: বাদাম এবং শস্যদানা, চকোলেট, বাদামের মাখন, চিংড়ি, স্ট্রবেরী, কন্ডেনস্ড মিল্ক, ডিম, সয়াবিন, কিসমিস, খেজুর, নারকেল দুধ, বাদামী চাল (মোটা চাল), ওটমিল, সিসামি বাটার বা তাহিনি, দই, কলা, অলিভ অয়েল, আঙুরের জুস, আনারস, আপেল, কমলা। দুগ্ধজাত খাবার এবং উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার থাকতে হবে প্রতি বেলার খাদ্য তালিকায়।
প্রকৃতির সাথেই থাকুন সফলতা হবে আপনারই

আপনারা হয়তো ভাবছেন আমি শুধু দামি দামি খাবারের কথা বলছি! আসলে উপরের যেই খাবারগুলো বলা হয়েছে এগুলো ওজন বাড়ানোর জন্য সাধারণত সবার আগে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু প্রাকৃতিক যেসব খাবার যেমন শাক-সবজি, ফলমূল এগুলোও কিন্তু ওজন বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট। একবার চিন্তা করে দেখুন পৃথিবীতে যেসব বিশাল ওজনের প্রাণী আছে সবগুলোই কিন্তু তৃণ, লতাপাতা আর ফল-মূল খেয়ে জীবন-ধারণ করে। খাবারকে শরীরের জ্বালানী মনে করুন, যদি ভাল জ্বালানী নেন তাহলে শরীর ঠিক থাকবে আর খারাপ জ্বালানী নিলে শরীরের কার্যক্রম ব্যহত হবে। তবে শর্ত হলো একটাই প্রাকৃতিক খাবার যেমন শাক-সবজি, ফলমূল একটু বেশি করে খেতে হবে।
খেতে ইচ্ছা না করলে ব্লেন্ড করে খান

আপনার যদি সবসময় খেতে ইচ্ছা না করে তাহলে খাবারগুলো ব্লেন্ড করে ফেলুন। আপনি খুব সহজে বিভিন্ন ড্রিংক তৈরি করে নিমেষেই পেতে পারেন শত শত ক্যালরি। ড্রিংক হিসাবে কলা, খেজুর এর সাথে একটু মাখন, দুধ অথবা আম, পেস্তা বাদাম, স্ট্রবেরি, কমলা ইত্যাদি শ্রেষ্ঠ। সব সময় এসব পুষ্টিকর উপাদান দিয়ে জুস তৈরি করে হাতের কাছে রাখুন। এগুলো আপনার শরীরের মাংস পেশীগুলোকে সুগঠিত করতে যথেষ্ট প্রোটিন সরবরাহ করবে।
আপনি যদি ব্যায়াম না করেন তাহলে আজই শুরু করুন

আমাদের সবার ধারণা ব্যায়াম শুধু ওজন কমানোর জন্যই কাজ করে। কিন্তু এটি ঠিক নয়। ব্যায়াম করলে শরীর একটিভ হয় এবং পুষ্টি উপাদানগুলো ঠিক মতো কাজে লাগে। ঠিক সময়ে ক্ষুধা লাগে, এবং তখন খাদ্য গ্রহণের রুচিও বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন হালকা কিছু ব্যায়ামই এর জন্য যথেষ্ট।
ওজন বাড়াতে চাই-২
|অনামিকা মৌ|
মানুষ
অভ্যাসের দাস। এই অভ্যাসটিকে যদি খানিকটা পরিবর্তন করতে পারেন তাহলে জীবনে
অনেক কিছুই অর্জন করা সম্ভব। যারা ওজন বাড়াতে চান তারা এই পদ্ধতি কাজে
লাগাতে পারেন। তবে ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে যে বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে তা হলো
লাগামহীন ভাবে ওজন বাড়তে দেয়া যাবেনা। প্রথম দিকে হয়তো কম বাড়বে কিন্তু
পরবর্তীতে তা লাগামহীন হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। গত
পর্বের ধারাবাহিকতায় আসুন দেখি আজ কি আছে।

ওজন বাড়াতে অভ্যাস পরিবর্তন

যাদের এজন কম তাদের বেশিরভাগের মধ্যে দেখা যায় খাবার ঠিকমতো চিবিয়ে খান না। খাবার ঠিকমতো না চিবালে হজমও ভাল হয় না। আর হজম ভাল না হলে পুষ্টি ঠিক মতো কাজে লাগে না।
যারা খাবারের পর অত্যাধিক পানিয় যেমন চা কফি পান করেন তাদের অনেক প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান যেমন লৌহ শোষন ব্যহত হয়। এজন্য খাবারের পর অতিরিক্ত পানিয় এমনকি সাধারণ পানি কম পান করা উচিত।
কিছু বদঅভ্যাস আছে, যেগুলো কাজে লাগিয়ে আমরা ওজন বাড়াতে পারি।
যেমন:
- টিভি দেখার সময় খাওয়া
- একই খাবার দিয়ে দিনের শুরু এবং শেষ করা
- প্লেটের সবটুকু খেয়ে শেষ করে ফেলা।
- যাত্রাপথে খাওয়া।
ওজন বাড়াতে সাপ্লিমেন্ট ওষুধ

কিছু ফুড সাপ্লিমেন্ট আছে যেগুলো ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। যেমন কিছু ভিটামিন এবং মিনারেল, হেলথ্ ড্রিংক ইত্যাদি। আপনার শরীরের ঘাটতির কথা চিন্তা করে এগুলো গ্রহন করলে উপকার পাওয়া যায়। তবে অপ্রয়োজনীয় ভাবে এগুলো গ্রহনে ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। এ জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এগুলো ব্যবহার করা উচিত।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বাছাই করা

প্রচুর পরিমাণ স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খেতে হবে। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বলতে ডিমের কুসুম, প্রাণিজ ফ্যাট, নারকেল দুধ, কলা অর্থাৎ পুষ্টিকর যেসব খাবারের সাথে ফ্যাট পাওয়া যায়।
Comments
Post a Comment